বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম | How to shift gears on a motorcycle

বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম: আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের জানাবো, বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম। বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হতে বা ঘুরতে কার না ভালো লাগে। তাছাড়া রাস্তায় এখন যানজট নিত্য দিন লেগেই থাকে। তাই যানজট এড়াতে এবং সময় বাঁচাতে  ছোট এই দুই চাকার বাইকের বিকল্প নেই।

বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম
বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম

এই বাহন আকারে ছোট হওয়ায় যানজটের ভিতর বা ফাঁক ফোকর দিয়েই খুব অল্প সময়ে গন্তব্য স্থানে পৌঁছানো যায়। তাই অনেকেই মোটরসাইকেলকে বাহন হিসেবে বেছে নেন। কিন্তু নতুনদের জন্য মোটরসাইকেল চালানো বেশ কিছু সমস্যায় পড়তে হয়।

কারণ বাইক চালানোর জন্য অনেক গুলো কাজ একই সাথে  করতে হয়। একটি বাইক চালানোর সময় বাইকের গতি ধীরে চলবে, না দ্রুত চলবে, অথবা থামতে হবে সম্পূর্ণ নির্ভর করে বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের উপর।

বাইকের গিয়ার পরিবর্তন করার নিয়ম সঠিকভাবে না জানলে বেশ কঠিন মনে হবে। এমনকি গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম না মেনে বাইক চালালে যে কোন মুহূর্তে যন্ত্রাংশের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। নিয়ম অনুযায়ী গিয়ার পরিবর্তন করলে একসময় অনেক সহজ হয়ে যাবে। মোটরসাইকেলের গিয়ার পরিবর্তন করার নিয়ম সঠিকভাবে জানার জন্য কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে আপনাকে ভালোভাবে জানতে হবে। মি এখন সে বিষয়গুলো নিয়ে পর্যায়ক্রমে বুঝিয়ে দেব।

আপনাদের মধ্যে যারা বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম শিখতে ইচ্ছুক তাদের জন্য আজকের পোস্টটি অনেক সাহায্যকারী হতে চলছে কারণ বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম সম্পর্কে এই পোস্টে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম সম্পর্কে ভালো ভাবে জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। চলুন শুরু করা যাক -

আপনি এই পোস্টে বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম কানুন ও অন্যান্য আরো যে সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন তার সূচিপত্র নিচে দেয়া হলো যথাঃ

  • বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম
  • বাইকে কত গিয়ারে কত স্পিড
  • বাইকের গিয়ার সমস্যা

বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম

বাইকের গিয়ার সঠিকভাবে Shift করার নিয়ম জানতে হলে অবশ্যই কিছু বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। আমি এখন আপনাদের গিয়ার সম্পর্কে বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করব মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়তে থাকুন। বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যে তিনটি জিনিস বাইকে একসাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হয় তা হলঃ Throttle, Clutch,  এবং Gear Shifter। চলুন এখন এই তিনটি জিনিসের কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। 

বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম
How to shift gears on a motorcycle

Throttle (থ্রোটল): ইঞ্জিন চালাতে সাহায্য করে। ইঞ্জিনের পাওয়ার বা ঘূর্ণন গতি  কম বা বেশি করে। থ্রোটল কে এক্সেলেটর বা পিকআপ নামেও অনেকে চেনেন। এর অবস্থান বাইকের হ্যান্ডেলের ডানপাশে। যা একটি তার বা কেবল লাইনের মাধ্যমে তেলের কার্বোটার এর সাথে সংযোগ থাকে।

থ্রোটল ঘোরানোর সাথে সাথে কার্বোটারে তেল কম বা বেশি সিলিন্ডারে প্রবেশ করে। অর্থাৎ Throttle বাড়ালে কার্বোটার থেকে সিলিন্ডারে তেল ও বাতাসের মিশ্রণ বেশি প্রবেশ করে। যার ফলে কম্প্রেশন এর সাহায্যে বেশি শক্তি উৎপন্ন হয় এবং ইঞ্জিনের ঘূর্ণন গতি বৃদ্ধি পায়।

Throttle কমালে কার্বোটার থেকে সিলিন্ডারে তেল ও বাতাসের মিশ্রণ কম প্রবেশ করে। যার ফলে কম্প্রেশন এর সাহায্যে কম শক্তি উৎপন্ন হয় এবং ইঞ্জিনের ঘূর্ণন গতি কমিয়ে যায়।

Clutch (ক্লাচ): বাইক চলতে সাহায্য করে। ক্লাচ বাইকের হ্যান্ডেলের বাম পাশে থাকে। ক্লাচ ব্যবহার করার নিয়ম আস্তে আস্তে ছেড়ে দিতে হয়, বাইক আস্তে আস্তে চলতে শুরু করলে এরপর সম্পূর্ণ ছেড়ে দিতে হয়। ক্লাচ হঠাৎ করে সম্পূর্ণ ছেড়ে দেওয়া যাবে না ছেড়ে দিলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে।

ক্লাচ টেনে ধরলে ইঞ্জিনের শক্তি চাকার সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় যার ফলে বাইক থেমে যায়। ক্লাচ ছেড়ে দিলে ইঞ্জিনের শক্তি চাকার সাথে সংযোগ হয়ে যায় যার ফলে বাইক চলতে শুরু করে।

Gear Shifter: এর সাহায্যে বাইকে গিয়ার পরিবর্তন করা হয়। অর্থাৎ বাইকের গতি কম বা বেশী করা হয়। অর্থাৎ গিয়ার ১, N, ২, ৩, ৪, ৫ সংখ্যা অনুসারে পরিবর্তন করে বাইকের গতি কম বা বেশি করে চালানো হয়। 


বাইকে কত গিয়ারে কত স্পিড

বাইকের গিয়ার পরিবর্তন নিয়মমাফিক করা উচিত। কারণ একটি বাইকের গিয়ার বক্স বা গিয়ারের সঙ্গে যে সকল যন্ত্রাংশ সংযোজন থাকে সে সকল যন্ত্রাংশের টেকসই ক্ষমতা Gear Shift করার ওপর অনেকটাই নির্ভর করে। তাই উচিত কত গিয়ারে কত স্পিড দিতে হবে বিষয়গুলো পরিপূর্ণভাবে জানা। আমি এখন সে বিষয়গুলো সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। তাই মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়ুন। 


Recommended Speed for Shifting Down:

একটি বাইক চালানোর সময় সব গিয়ার ব্যবহার করে বেশি স্পিডে চালালে, বাইকের গতি কমানোর সময় নিচের দেয়া নিয়ম অনুসারে গিয়ার পরিবর্তন করুন।

১) ৫ থেকে ৪ গিয়ারে বাইকের গতি কমাতে ৪৫ কিঃ মিঃ/ ঘন্টা স্পিড রাখুন। 

২) ৪ থেকে ৩ গিয়ারে বাইকের গতি কমাতে ৩৫ কিঃ মিঃ/ ঘন্টা স্পিড রাখুন।

৩) ৩ থেকে ২ গিয়ারে বাইকের গতি কমাতে ২৫ কিঃ মিঃ/ ঘন্টা স্পিড রাখুন।

৪) ২ থেকে ১ গিয়ারে বাইকের গতি কমাতে ১৫ কিঃ মিঃ/ ঘন্টা স্পিড রাখুন।


যখন নিচের দিকে গিয়ার পরিবর্তন করা হয় তখন কোনোভাবেই ইঞ্জিনের আরপিএম অতিরিক্ত রেখে গিয়ার পরিবর্তন করা যাবে না। কেননা ইঞ্জিনের অতিরিক্ত RPM অবস্থায় গিয়ার পরিবর্তন করলে, গিয়ারে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে এছাড়াও পিছনের চাকা ছিটকে যেতে পারে।


Optimum Shifting Speeds for Best Mileage:

একটি বাইকের সেরা মাইলেজ পাওয়ার জন্য নির্ধারিত স্পিডে চালাতে হবে। নির্ধারিত স্পিডে বাইক চালালে জ্বালানি সাশ্রইসহ ইঞ্জিনের পারফরমার্স ভালো থাকবে। বাইকের ভালো মাইলেজ পাওয়ার জন্য নিচের দেয়া নিম্নোক্ত গতিতে গিয়ার পরিবর্তন করে বা রেখে বাইক চালান।

১) ১ম গিয়ার: ০ কিঃ মিঃ/ ঘন্টা। 

২) ২য় গিয়ার: ১৪ - ১৭ কিঃ মিঃ/ ঘন্টা।

৩) ৩য় গিয়ার: ২২ - ২৫ কিঃ মিঃ/ ঘন্টা।

৪) চতুর্থ গিয়ার: ৩১ - ৩৪ কিঃ মিঃ/ ঘন্টা।

৫) পঞ্চম গিয়ার: ৩৮ - ৪২ কিঃ মিঃ/ ঘন্টা।



শেষ কথা: আশা করি আপনারা পোস্টটি পড়ে বাইকের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম সম্পর্ক বুঝতে পেরেছেন।  বাইক সম্পর্কে অন্যান্য সকল ভিডিও দেখতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে ভিজিট করুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন